পৃথিবীর ওপর এবং মানব সভ্যতার ইতিহাসের পুরোটা জুড়েই মানুষের জীবনে চাঁদের ভূমিকা ছিল অবিচ্ছেদ্য। বিশ্বের সব সভ্যতার ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকা চাঁদের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে সাগরে জোয়ার ভাটা নির্ধারিত হয়।
এমনকি একেবারে গোড়ার দিকে চাঁদই পৃথিবীতে জীবন শুরু করতে সাহায্য করেছে বলে ধারণা করা হয়। সেই চাঁদ আমাদের পৃথিবী থেকে ক্রমান্বয়ে দূর সরে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন: MS Word ফাইল, ফোল্ডারে ডকুমেন্ট সংরক্ষণ (Beginners)
চাঁদ কেন দূরে সরে যাচ্ছে
চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে তার সুক্ষভাবে ভারসাম্যপূর্ণ অ্যাস্ট্রবেলের মাধ্যমে প্রদক্ষিণ করে কিন্তু কখনোই নিজে ঘুরপাক খায়না। সে কারণে আমরা সব সময় চাঁদে একটি মাত্র পিঠ দেখতে পাই।
কিন্তু Lunar Recession নামে এক প্রক্রিয়ার জন্য চাঁদ (Moon) ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন চাঁদ প্রতিবছর দেড় ইঞ্চি হারে পৃথিবী থেকে দূরে সরছে এবং এর ফলে আমাদের দিনের দৈর্ঘ্য একটু একটু করে বাড়ছে। আর এসবই হচ্ছে জোয়ারের জন্য। জোয়ারের টানের ফলে, পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে আসে। এবং সেই শক্তিতে চাঁদে বা Moon কৌণিক এক ধরনের ভরবেগ তৈরি হয়
বিজ্ঞানীদের সবশেষ বিশ্লেষণ অনুযায়ী ১৬শো শতাব্দী শেষ দিক থেকে পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য প্রতি শতাব্দীতে গড়ে প্রায় ১.০৯ মিলিসেকেন্ড হারে বেড়েছে । এমনিতে এটি খুব বেশি বলে মনে না হলেও, পৃথিবীর সাড়ে ৪০০ কোটি বছরের ইতিহাসে এটি এক গভীর পরিবর্তন।
চাঁদের অবস্থান
বর্তমানে চাঁদের অবস্থান পৃথিবী থেকে তিন লক্ষ 84 হাজার কিলোমিটার দূরে। কিন্তু একটি সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে, প্রায় ৩২০ কোটি বছর আগে যখন পৃথিবীর টেকটনিক প্লেট মাত্র ঘুরতে শুরু করেছিল এবং মহাসাগরে বসবাসকারী অনুজীবগুলো নাইট্রোজেন খেতে শুরু করেছিল। সেই সময় চাঁদ পৃথিবী থেকে মাত্র ২ লক্ষ ৭০ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল।
যা বর্তমান দূরত্বের প্রায় ৭০ ভাগ। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরে সরে যাওয়ার হার ও সব সময় একই ছিল না। সময়ের সাথে সাথে এর গতি কখনো বেড়েছে, আবার কখনো কমেছে। তবে ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় জুড়ে চাঁদ বর্তমানে তুলনায় অনেক ধীর গতিতে দূরে সরে গিয়েছে।
দূরে সরে যাওয়ার কারণ
প্রকৃতপক্ষে আমরা বর্তমানে এমন একটি সময়ের মধ্যে বাস করছি যখন এই দূরে সরে যাওয়া বা লুনার রিসেশনের হার অস্বাভাবিকভাবে বেশি। বিজ্ঞানীদের ধারণা এর পেছনে অন্যতম কারণ আটলান্টিক মহাসাগরের আয়তন।
পৃথিবীতে মহাদেশগুলো এখন যেভাবে অবস্থান করছে তাতে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অববাহিকায় একটি ধাক্কা তৈরি করছে এবং এই মহাসাগরে যে পানি বা water রয়েছে তা জোয়ারের কাছাকাছি হারে একবার সামনে এগিয়ে যায় এবং একবার পেছনে সরে আসে।
তথ্যগতভাবে, নাসার Artemis প্রোগ্রামের মহাকাশচারীদের পরবর্তী দলটি যখন চাঁদের দিকে উড়ে যাবেন। তখন তারা বলতে পারবেন যে ৬০ বছর আগে এপোলো প্রোগ্রামে তাদের পূর্বসূরীদের চেয়েও তারা বেশি দূরত্ব থেকে পৃথিবীর দিকে ফিরে তাকিয়েছেন।
তবে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যেতে থাকলেও চাঁদ পৃথিবীকে সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে যাবে এমন সম্ভাবনা আসলে নেই।
Disclaimer
The information in this article has been gathered from online sources and may not correspond with content on other websites. It is provided for informational and educational purposes only. We assume no liability for its accuracy or relevance to external sources.
Valo likhsen…